কক্সবাজারে রোহিঙ্গার দখলে সরকারি পাহাড় !

আরফাতুল মজিদ •


কক্সবাজার পৌরসভার ভিতরেই এক রোহিঙ্গার দখলে রয়েছে প্রায় ৫ একর সরকারি পাহাড়। দীর্ঘদিন দখলে রাখা এই সরকারি পাহাড় এখন বিক্রি করছে খণ্ড খণ্ড করে।

বিক্রির পাশাপাশি বর্তমানে সমানতালে চলছে পাহাড় কাটাও। সরকারি এতো বিশাল পাহাড়ি এলাকা দখলের পর বিক্রি এবং প্রকাশ্যে পাহাড় কাটা হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট দফতর গুলো।

কক্সবাজার পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডস্থ সাত্তার ঘোনার পাশেই ছৈয়দ নগর এলাকায় সরকারি পাহাড় দখলে রেখে বিক্রি করছে আবু তাহের নামের এক ব্যক্তি। আবু তাহের ৭নং ওয়ার্ডস্থ পাহাড়তলী বউবাজার এলাকার মৃত আবুল কালামের ছেলে।

তবে তাহের রোহিঙ্গা নাগরিক বলে এলাকায় বেশ প্রচার রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কক্সবাজার পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডস্থ সাত্তার ঘোনার পাশেই নতুন এলাকা ‘ছৈয়দ নগর’।

প্রায় ১০ বছর আগে ছৈয়দ নগর এলাকায় প্রায় ৫ একর সরকারি পাহাড় দখলে নেন আবুল কালামের ছেলে আবু তাহের ও টেকনাফ হ্নীলার মৃত মো. খলিলুর রহমানের ছেলে আবুল হাসেম। তারা দু’জনেই সরকারি কয়েকটি পাহাড় দখলে রেখে কেয়ারটেকার নিয়োজিত করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আবু তাহের ও আবুল হাসেম সরকারি পাহাড় দখলে রাখলেও নিয়মিত দেখাশুনা করেন আবু তাহের ও তাহেরের বড় বউ বুলবুল আক্তার। তাহের দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। প্রবাস থেকে এসেই সরকারি এসব পাহাড় খণ্ড খণ্ড করে বিক্রি শুরু করেন।

গত দুই বছর ধরেই সরকারি এসব পাহাড়ি জমি বিক্রি করে যাচ্ছে আবু তাহের ও তার স্ত্রী বুলবুল আক্তার।

ইতিমধ্যে প্রায় ৩ একর পাহাড়ি জমি বিক্রি করে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আবু তাহের একজন রোহিঙ্গা নাগরিক। প্রায় ১৯৯৬ সালের দিকে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে বিদেশ চলে যায়। বিদেশ থেকে নিয়মিত কক্সবাজারে আসা-যাওয়া করে। সদরের পিএমখালী এলাকা থেকে বিয়েও করেন। সবাই রোহিঙ্গা আবু তাহের হিসেবে চিনেন তাকে। বর্তমানে দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে থাকেন পাহাড়তলী এলাকায়। গত দুই বছর ধরে সরকারি এসব পাহাড় বিক্রি বাড়িয়ে দিয়েছে আবু তাহের।

পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সংযুক্তা দাশ গুপ্তা বলেন, দ্রুত সময়ে ছৈয়দ নগর এলাকা পরিদর্শন করে পাহাড় কর্তনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) নু-এমং মারমা মং বলেন, নিয়মিত পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। সাত্তার ঘোনাস্থ ছৈয়দ নগর এলাকায়ও অভিযান চালিয়ে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সাথে সেখানে উচ্ছেদও করা হবে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আমিন আল পারভেজ বলেন, সরকারি পাহাড় দখলের পর বিক্রি এবং কাটার বিষয়টি শুনেছি। সদর এসিল্যান্ডকে বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।